জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) বাসে গণিত বিভাগের ৪৮তম ব্যাচের শিক্ষার্থী মো. সংগ্রাম ইসলামকে মারধরের ঘটনার প্রতিবাদ ও দোষীদের শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা৷

সোমবার (১৬ মে) বেলা ১২ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহিদ মিনার প্রাঙ্গণে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়৷ এ সময় মানববন্ধনে বিশ্ববিদ্যালয়ের শতাধিক শিক্ষার্থী অংশগ্রহন করেন।

মনবন্ধনে বিশ্ববিদ্যালয়ের গনিত বিভাগের ৪৫ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী প্রসেনজিৎ কুমার জিৎ বলেন,’একজন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীর কাছে এমন সন্ত্রাসী আচারন কেউ প্রত্যাশা করে না।আমরা এই হামলার তীব্র প্রতিবাদ জানায়। প্রশাসনের কাছে বিচারের দাবি জানাচ্ছি।’

সময় মানববন্ধনে ইতিহাস ৪৫ ব্যাচের শিক্ষার্থী নুরুজ্জামান শুভ বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সবচেয়ে বেশি নিরাপত্তা বোধ করে ক্যাম্পাসে। ক্যাম্পাসে বাইরে থাকলে সেটা হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসে। কিন্তু সম্প্রতি আমরা দেখলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসে শিক্ষার্থীকে রড এবং স্টাম্পড দিয়ে বেধড়ক মারধর করা হয়। এখন প্রশ্ন আসে, একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসে রড এবং স্টাম্পড কেন থাকবে! রড কিংবা বাসে থাকার কথা না।’

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর নাম মোঃ সংগ্রাম ইসলাম। তিনি গণিত বিভাগের ৩য় বর্ষের (৪৮ ব্যাচের) ও আ.ফ.ম কামালউদ্দিন হলের আবাসিক শিক্ষার্থী।

গত বৃহস্পতিবার (১২ মে) বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস থেকে বঙ্গবাজারগামী স্টুডেন্ট বাসে যাওয়ার পথে টেকনিক্যালে এ হামলার শিকার হয় বলে জানান সংগ্রাম। পরে তিনি শুক্রবার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর বিচার চেয়ে লিখিত অভিযোগ দেন।

লিখিত অভিযোগে সংগ্রাম বলেন, ‘বৃহস্পতিবার বিকেল ক্যাম্পাস থেকে একতলা বাসে ঢাকায় যাচ্ছিলাম, টেকনিকালের কাছাকাছি বাস আচমকা ব্রেক করাই আমি কাঁধে ও বুকে জোরে সামনের দরজার সাথে বাড়ি খাই। আমি এভাবে ব্রেক করার কারন ড্রাইভারের কাছে জানতে চাইলে ভূতাত্নিক বিজ্ঞান বিভাগের ৪৭ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী আদনান শাকিল উগ্রভাবে বলেন ‘হাত ছিল না তোর?’। আমি তাকে বললাম, ভাই আমি দুপুরে খাই নি আর দুটো ব্যাগের জন্য ব্যালেন্স করতে পারিনি। আমার কথা শেষ না করতে দিয়েই সে আমাকে বলে ‘তোর ব্যাচ কত! তোর পরিচয় দে!’ এসময় তার সাথে আরো দুই তিনজন এসে যুক্ত হয়।’

লিখিত অভিযোগে সংগ্রাম আরো বলেন, ‘বারবার উগ্রভাবে আমার পরিচয় জিজ্ঞাসা করায় আমি পরিচয় দেই তখন তারা আমাকে গালি দিয়ে বাস থেকে নেমে যেতে বলে। এমন সময়ই আদনান শাকিল আমার মাথায় জোরে জোরে উপর্যুপরি ঘুষি খাপ্পড় মারা শুরু করে আমি প্রতিরোধ করতে গেলে তার সাথে থাকা অজ্ঞাতনামা দুইজন পিছন দিয়ে মারতে থাকে এবং আদনান শাকিল কোথা থেকে একটা স্ট্যাম্প নিয়ে এসে প্রচণ্ড জোরে আমার পাসে ও পিছনে মারতে থাকে এক পর্যায়ে স্ট্যাম্পটি ভেঙে যায়। এসময় বাসের জানালা থেকে আমার বিভাগের বন্ধু আশিক ঝামেলা দেখতে পেয়ে নেমে আসে। ও আরেকজন যে আমাকে রড নিয়ে মারতে আসছিল তাকে দুই হাত দিয়ে ঠেকায়।’

এ অভিযোগের বিষয়ে আদনান শাকিলের সাথে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেন নি৷

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর আ.স.ম ফিরোজ উল হাসান বলেন,’ আমরা ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর অভিযোগ পেয়েছি। সুষ্ঠু বিচারের জন্য যা যা করার প্রয়োজন আমরা সবটুকু করব।”